আন্তর্জাতিক

কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের দমনে যে পদক্ষেপ নিলো ভারত

একটি বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছেন সঞ্জিত কুমার। কাশ্মিরের ঢাংরি গ্রামের বেসামরিক বাসিন্দা তিনি। অল হিন্দু মিলিশিয়া ইউনিটের সক্রিয় সদস্যও সঞ্জিত। তার মতো এরকম প্রায় ৫ হাজার হিন্দু গ্রামবাসীকে অস্ত্র সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। মূলত কাশ্মিরের বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

ভারতের দখলে থাকা কাশ্মীরের মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে ৫ লাখেরও বেশি ভারতীয় সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা আছে। কয়েক দশক ধরে চলমান এই বিদ্রোহ দমাতে এবার আরও কঠোর হচ্ছে ভারত সরকার।

গত বছর, নতুন এই মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের ঘোষণা দেয় ভারত। সঞ্জিত কুমারের গ্রামের পাশেই এক ভয়াবহ হামলার পর এই বাহিনীতে যোগ দেন তিনি।

৩২ বছরের এই পৌরসভার কর্মী বলেন, ‘সেই হামলায় আমরা পুরোপুরি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।’

নিজেকে হিন্দু কমিউনিটির সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করতে কপালে জাফরান রঙের একটি তিলক এঁকে রেখেছেন সঞ্জিত। তিনি বলেন, ‘জাতির সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে, তাদের দমন করাই আমার লক্ষ্য।’

প্রায় ৭৫ বছর আগে ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে বিরোধপূর্ণ অঞ্চল কাশ্মির। দুই দেশই চায় অঞ্চলটির পূর্ণ দখল।

এদিকে কাশ্মিরের সার্বভৌমত্ব দাবি করে অঞ্চলটির বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। সশস্ত্র সংঘাতে ইতোমধ্যে প্রাণ গেছে অঞ্চলটির হাজার হাজার মানুষের।

সেনাবাহিনী সমর্থিত নবগঠিত মিলিশিয়া সংগঠনটি মূলত বিদ্রোহীদের রোষ থেকে অঞ্চলটির হিন্দু জনগোষ্ঠীদের রক্ষার স্বার্থে গঠন করা হয়েছে। অঞ্চলটিতে মিলিশিয়া বাহিনী গ্রাম প্রতিরক্ষা গার্ড নামে পরিচিত।

কাশ্মিরের হিন্দু জনগোষ্ঠী একদিকে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে প্রতিরক্ষা নিয়ে সতর্ক, অপরদিকে সশস্ত্র সংঘাতের কারণে সমস্যা আরও বেড়ে যাওয়ার ভয়ে আতঙ্কিত সেখানকার মুসলিম জনগোষ্ঠী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মুসলিম বলেন, ‘শুধু এক সম্প্রদায়ের হাতে যেভাবে অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে আমি আতঙ্কিত। তরুণদের হাতে হাতে অস্ত্র। এতে আর যাই হোক, ভালো কিছু হতে পারে না।’

ক্রোধ চেপে রেখেছেন ঢাংরি গ্রামের বাসিন্দারা। চোখের সামনে হাতে খুন হতে দেখেছেন ৭ প্রতিবেশীকে।

গ্রামটির ৫৫ বছরের বাসিন্দা মুরারি লাল শর্মা বলেন, ‘অস্ত্রসহ অথবা অস্ত্রহীন, সব অবস্থাতেই আতঙ্কিত থাকি আমরা। তবে এবার পাল্টা লড়াই হবে।’

এ বিষয়ে ভারতের তথ্যমন্ত্রী কাঞ্চন গুপ্ত বলেন, ‘এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য হলো প্রতিরক্ষা, আক্রমণ করা নয়।’

এর আগে ১৯৯০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে কাশ্মিরের জম্মু অংশে ভারত সরকারের উদ্যোগে মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হয়। সে সময় সশস্ত্র সংঘাতের তীব্রতা অনেক বেড়ে গিয়েছিল।

গ্রাম প্রতিরক্ষা কমিটির প্রায় ২৫ হাজার সদস্যের হাতে তখন অস্ত্র তুলে দিয়েছিল দেশটির সরকার।

পরবর্তীতে গ্রামের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নৃসংশতা চালানো শুরু করে এই কমিটির সদস্যরা। অন্তত ২১০টি হত্যা, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যায় এই কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে।

সূত্র: এএফপি

 

Source link

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Stream TV Pro News - Stream TV Pro World - Stream TV Pro Sports - Stream TV Pro Entertainment - Stream TV Pro Games - Stream TV Pro Real Free Instagram Followers PayPal Gift Card Generator Free Paypal Gift Cards Generator Free Discord Nitro Codes Free Fire Diamond Free Fire Diamonds Generator Clash of Clans Generator Roblox free Robux Free Robux PUBG Mobile Generator Free Robux 8 Ball Pool Brawl Stars Generator Apple Gift Card Best Android Apps, Games, Accessories, and Tips Free V Bucks Generator 2022