
দেশ পরিচিতি: উত্তর কোরিয়া
পীত সাগর ও জাপান সাগরের উপকূলবর্তী কোরীয় উপদ্বীপের উত্তরের রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়া। কয়েক দশক ধরে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গোপনীয়তা রক্ষাকারী দেশ এটি। দেশটিতে এখনও পুরোদমে কমিউনিস্ট শাসন চালু রয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে কঠোরভাবে বিচ্ছিন্নতা রক্ষা করে উত্তর কোরীয় সরকার। সম্প্রতি দেশটির পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এ বিচ্ছিন্নতাকে যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৮ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে উত্তর কোরিয়া। দেশটির ইতিহাসে প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছেন কোরীয় নেতা কিম ইল-সাং।
কয়েক দশক ধরে চলা কঠোর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের কারণে দেশটিতে স্থবির পরিবেশ তৈরি হয়। গণতন্ত্রহীন একদলীয় শাসন ব্যবস্থার রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
নাম: ডেমোক্র্যাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়ারাজধানী: পিয়ংইয়ংআয়তন: ১ লাখ ২০ হাজার ৫৪০ বর্গ কিলোমিটারজনসংখ্যা: ২ কোটি ৫৯ লাখভাষা: কোরীয়গড় আয়ু: পুরুষদের ৬৮, নারীদের ৭৫ বছর
নেতৃত্ব
সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উন
কিম রাজবংশের তৃতীয় নেতা কিম জং-উন। তার দাদা কিম ইল-সাং কে দেশটির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২০১১ সালের ডিসেম্বরে তার পিতা কিম জং-ইল হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার পর ক্ষমতায় আসেন কিম জং-উন।
কিম জং-উনও পূর্বসূরীদের মতো সামরিক প্রচার অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়া তার শাসনামলে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে মিশ্র সংকেত পায় বিশ্ব।
সংবাদমাধ্যম
সংবাদমাধ্যমে কঠোর নিয়ন্ত্রণ জারি রেখেছে দেশটির সরকার। রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সরকারি প্রচারণার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম ও পত্রিকা সরাসরি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত। এমনকি অর্থনৈতিক সমস্যা কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবরও সবসময় সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে না। আর যদি কখনও আসে, তাহলে তা দেশের জন্য লড়াই করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়। সাধারণ জনগণ বিদেশি সম্প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে ধরা পড়লে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।
দেশটির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা
১৯৪৫: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়।
১৯৪৮: সোভিয়েত সমর্থিত উত্তর ও মার্কিন সমর্থিত দক্ষিণে বিভক্ত হয়ে যায় কোরিয়া।
১৯৫০-১৯৫৩: কোরীয় যুদ্ধের অবসান ঘটে।
১৯৯৪: প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট কিম ইল-সাং মারা যান। নতুন প্রেসিডেন্ট হন কিম জং-ইল।
২০১১: কিম জং-উন প্রেসিডেন্ট হন।
২০১৮: দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রথম উত্তর কোরীয় নেতা হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় যান কিম। কয়েক সপ্তাহ পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
সূত্র: বিবিসি