আন্তর্জাতিক

দেশ পরিচিতি: সুইডেন

স্ক্যান্ডিনেভিয়া উপদ্বীপে অবস্থিত উত্তর ইউরোপের দেশ সুইডেন। পশ্চিমে নরওয়ে, উত্তর-পূর্বে ফিনল্যান্ড, এবং দক্ষিণ-পূর্বে আছে যথাক্রমে বাল্টিক সাগর ও বথনিয়া উপসাগর। ৪ লাখ ৫০ হাজার ২৯৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সুইডেন উত্তর ইউরোপের বৃহত্তম দেশ; ইউরোপের পঞ্চম বৃহত্তম এবং বিশ্বের ৫৫তম বৃহত্তম দেশ। ডেনমার্ক, জার্মানি, পোল্যান্ড, রাশিয়া, লিথুয়ানিয়া, লাতভিয়া এবং এস্তোনিয়ার সঙ্গে সুইডেনের সমুদ্রসীমা রয়েছে।

শক্তিশালী অর্থনীতির দেশটিতে বেকারত্বের হার একেবারেই কম। সুইডিশরা একটি উন্নত কল্যাণ ব্যবস্থা উপভোগ করে। তাদের জীবনযাত্রার মান এবং আয়ু বিশ্বের সর্বোচ্চ। সুইডেন একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ রাষ্ট্রপ্রধান। তবে বহুদিন ধরেই রাজার ক্ষমতা কেবল আনুষ্ঠানিক কাজ-কর্মেই সীমাবদ্ধ। 

সুইডেনের আইনসভার নাম রিক্সড্যাগ, যার সদস্য সংখ্যা ৩৪৯। আইনসভার সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন। প্রতি চার বছর অন্তর সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় রবিবার আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে অভিবাসন সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে সুইডেন অন্য যেকোনও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের তুলনায় বেশি অভিবাসী গ্রহণ করেছে।  

সুইডেন তার নিরপেক্ষতার জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত ছিল। স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সুইডেন ১৯৯৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান করে। তবে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের জন্য আবেদন করে দেশটি।

 

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

নাম: কিংডম অব সুইডেনরাজধানী: স্টকহোমআয়তন: ৪ লাখ ৫০ হাজার ২৯৫ বর্গ কি.মি  জনসংখ্যা: ১০.৪ মিলিয়নভাষা: সুইডিশ, সামি, ফিনিশ, মেনকিয়েলি, রোমানি, ইদ্দিশআয়ুষ্কাল: ৮১ বছর (পুরুষ), ৮৫ বছর (নারী)

 

নেতৃত্ব

রাজা কার্ল গুস্তাফ

রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ ১৯৭৩ সালে তার পিতামহ গুস্তাফ অ্যাডলফের মৃত্যুতে সিংহাসনে আরোহণ করেন। বর্তমান রাজার বাবা ১৯৪৭ সালে একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। তখন কার্ল গুস্তাভের বয়স ছিল মাত্র ৯ মাস। ১৯৭৪ সালে সাংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। ছবি: রয়টার্স

প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন

উলফ ক্রিস্টারসন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি মডারেট পার্টি, খ্রিস্টান ডেমোক্র্যাট এবং উদারপন্থীদের মধ্যে একটি জোট সরকারের নেতৃত্ব দেন।

স্টকহোমে সুইডিশ একাডেমির নোবেল পুরস্কার ঘোষণা। ছবি: রয়টার্স

সংবাদমাধ্যম

সুইডিশ দর্শকরা বিভিন্ন ধরনের সরকারি এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক সম্প্রচার পরিষেবা উপভোগ করে। তবে টিভি দেশটিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। দেশটির বেশিরভাগ বাড়িতে মাল্টি চ্যানেল কেবল বা স্যাটেলাইট টিভি রয়েছে।

সরকারি রেডিও ভরিগেসের পাশাপাশি প্রায় ১০০টি বেসরকারি রেডিও আছে দেশটিতে।

  সুইডেনের উত্তরাঞ্চলে বরফ বনে পরাবাস্তব নর্দার্ন লাইটস। ছবি: রয়টার্স

সুইডেনের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা

১৭তম শতাব্দী: সুইডেন একটি প্রধান ইউরোপীয় শক্তি হিসেবে বিকশিত হয় গুস্তাভাস অ্যাডলফাসের অধীনে। একাধিক যুদ্ধে রাশিয়া এবং পোলিশ-লিথুয়ানিয়ান কমনওয়েলথের কাছ থেকে অনেক অঞ্চল দখল করে দেশটি।

১৮ শতক: সুইডেন ধীরে ধীরে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার বাইরে তার অবশিষ্ট অঞ্চলগুলো হারায়।

১৮১০: ন্যাপোলিয়েনের এক মার্শাল জিন-ব্যাপটিস্ট বার্নাডোট সিংহাসনের উত্তরাধিকারী নির্বাচিত হন এবং হাউস অব বার্নাডোট প্রতিষ্ঠা করেন।

১৮১৪: সুইডেন ফ্রান্সের মিত্র ডেনমার্ক-নরওয়েকে নরওয়েকে ছেড়ে দিতে বাধ্য করে। নরওয়ে সুইডিশ রাজত্বের অধীনে সুইডেনের সঙ্গে একটি ইউনিয়নে যোগদান করেছে।

১৯০৫: সুইডেন এবং নরওয়ের মধ্যে ইউনিয়ন শান্তিপূর্ণভাবে বিলুপ্ত হয়।

১৯১৪: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু, সুইডেন নিরপেক্ষ থাকে।

১৯২০: সুইডেন কৃষি থেকে একটি শিল্প সমাজে বিকশিত হয়। গণতান্ত্রিক সরকার সামাজিক সংস্কার করে।

১৯৩৯: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুইডেন নিরপেক্ষতা ঘোষণা করে।

১৯৫২: সুইডেন নরডিক কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়।

১৯৫৯: সুইডেন ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য সমিতি (ইএফটিএ)-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়।

সুইডিশদের জীবনযাত্রার মান এবং আয়ু বিশ্বের সর্বোচ্চ। ছবি: ইপিএ

১৯৭১: দুই কক্ষের পার্লামেন্ট আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব দ্বারা নির্বাচিত একটি চেম্বার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।

১৯৮৬: স্টকহোমে প্রধানমন্ত্রী ওলোফ পালমেকে হত্যা করা হয়।

১৯৯৪: গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদের সমর্থন দেয় দেশটির জনগণ।

২০০০: দক্ষিণ সুইডেনের মালমো এবং ডেনিশ রাজধানী কোপেনহেগেনের সঙ্গে সংযোগকারী নতুন সেতু এবং টানেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।

২০০৩: স্টকহোম ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনা লিন্ড ছুরিকাঘাতে নিহত হন।

২০০৯: পর্যায়ক্রমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ৩০ বছরের পুরানো নীতিকে পাল্টে ফেলে সরকার। দাবি করে, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করতে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য নতুন চুল্লি প্রয়োজন।

২০২২: ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করে।

সূত্র: বিবিসি

Source link

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Stream TV Pro News - Stream TV Pro World - Stream TV Pro Sports - Stream TV Pro Entertainment - Stream TV Pro Games - Stream TV Pro Real Free Instagram Followers PayPal Gift Card Generator Free Paypal Gift Cards Generator Free Discord Nitro Codes Free Fire Diamond Free Fire Diamonds Generator Clash of Clans Generator Roblox free Robux Free Robux PUBG Mobile Generator Free Robux 8 Ball Pool Brawl Stars Generator Apple Gift Card Best Android Apps, Games, Accessories, and Tips Free V Bucks Generator 2022