আন্তর্জাতিক

সুদানে সংঘাতের নেপথ্যে সামরিক নেতৃত্বের বিরোধ

সুদানের রাজধানী খার্তুম এবং দেশের অন্যত্র যে লড়াই শুরু হয়েছে, তা দেশটির সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে বিরোধের প্রত্যক্ষ ফলাফল। আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এবং নিয়মিত সেনাদের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।

লড়াইয়ের পটভূমি

২০২১ সালের অক্টোবরে অভ্যুত্থানের পর থেকে সুদান একটি জেনারেল কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। বিরোধের কেন্দ্রে দুইজন সামরিক ব্যক্তি রয়েছেন, যারা এখন একে অপরকে যেকোনও মূল্যে পরাস্ত করতে চাইছেন।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং কার্যত দেশটির প্রেসিডেন্ট। তার ডেপুটি এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো। তিনি হেমেদতি নামে বেশি পরিচিত। দেশ কোন দিকে যাচ্ছে এবং বেসামরিক শাসনের দিকে প্রস্তাবিত পদক্ষেপ নিয়ে তাদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।

শনিবার কেন সংঘর্ষের শুরু?

দেশজুড়ে আরএসএফ সদস্যদের মোতায়েন করায় কয়েকদিন ধরেই সুদানজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। কারণ সেনাবাহিনী এটিকে হুমকি হিসেবে দেখছিল। তারপরও আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির সমাধান হতে পারে এমন কিছু আশা করা হচ্ছিল। তবে তা হয়নি।

শনিবার সকালে কে প্রথম গুলি চালিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ ঘটনা ইতোমধ্যে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে।

কূটনীতিকরা দুই পক্ষের প্রতি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

আরএসএফ কারা?

আরএসএফ ২০১৩ সালে গঠিত হয়েছিল। এর উৎপত্তি কুখ্যাত জানজাউইদ মিলিশিয়া থেকে যারা দারফুরে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে নৃশংস লড়াই করেছিল।

জেনারেল দাগালো আসলে একটি শক্তিশালী বাহিনী গড়ে তুলেছেন, যারা ইয়েমেন এবং লিবিয়ার সংঘাতে হস্তক্ষেপ করেছে। সুদানের কিছু সোনার খনিও তাদের নিয়ন্ত্রণে।

২০১৯ সালের জুনে ১২০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে হত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে আরএসএফ-কে।

সেনাবাহিনীর বাইরে এমন শক্তিশালী একটি বাহিনীকে দেশের অস্থিতিশীলতার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সামরিক বাহিনী কেন দায়ী?

২০১৯ সালে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর শুরু হওয়া উত্তেজনার সর্বশেষ পর্ব এ লড়াই।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের আহ্বান জানিয়ে রাস্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল সে সময়। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি অভ্যুত্থান করেছিল। তবে বেসামরিক নাগরিকরা তখনও গণতান্ত্রিক শাসনের দাবি জানাতে থাকে।

তারপর অনেক আলোচনার পর একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সুদানে। তবে ২০২১ সালের অক্টোবরে আরেকটি অভ্যুত্থানে সে সরকারকে উৎখাত করা হয়েছিল। আর তখন থেকেই জেনারেল বুরহান ও জেনারেল দাগালোর মধ্যে বৈরিতা তীব্র হয়।

বেসামরিকদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার একটি কাঠামোগত চুক্তি গত ডিসেম্বরে তৈরি হলেও বিস্তারিত চূড়ান্ত করার আগেই তা ভেস্তে যায়।

এখন কী হতে পারে?

যুদ্ধ চলতে থাকলে তা দেশকে আরও বিভক্ত করে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়াতে পারে। এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে দুর্দান্ত কূটনীতিক তৎপরতার প্রয়োজন। বিবদমানরা দুই পক্ষের মধ্যে তারা এখন আলোচনায় বসার একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। আর এই সময়ের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতে হবে।

সূত্র: বিবিসি

 

Source link

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Stream TV Pro News - Stream TV Pro World - Stream TV Pro Sports - Stream TV Pro Entertainment - Stream TV Pro Games - Stream TV Pro Real Free Instagram Followers PayPal Gift Card Generator Free Paypal Gift Cards Generator Free Discord Nitro Codes Free Fire Diamond Free Fire Diamonds Generator Clash of Clans Generator Roblox free Robux Free Robux PUBG Mobile Generator Free Robux 8 Ball Pool Brawl Stars Generator Apple Gift Card Best Android Apps, Games, Accessories, and Tips Free V Bucks Generator 2022